ঘুরে এলাম দক্ষিণ কোরিয়ার পূর্বতম স্থান। কোরিয়া দেশটি উত্তর থেকে দক্ষিণে বিস্তৃত, তিন দিক সমুদ্রে ঘেরা। পূর্ব তীরে দক্ষিণের কাছে অবস্থিত পোহাং শহরের নিকটবর্তী হোমিগট (호미곶) হল দক্ষিণ কোরিয়ার পূর্বতম স্থান। তাই সুযোগমত পৌঁছে গেলাম হোমিগট, কোরিয়ার প্রথম সূর্যোদয় দেখতে।

আসলে সুযোগ এল দ্বিতীয়বারের জন্য পোহাং এসে। পোহাং এর Asia Pacific Center for Theoretical Physics, সংক্ষেপে APCTP তে আয়োজিত হল ৬৮তম মহাকর্ষীয় তরঙ্গ ও গাণিতিক আপেক্ষিকতাবাদ কর্মশালা। সেখানে যোগ দিতে এসেই হল এই সুযোগ।

সিউল থেকে পোহাং কোরিয়ার দ্রুতগামী রেল KTX করে দু ঘণ্টায় পৌঁছে যাওয়া যায়। কোরিয়ার রেল খুবই সময়নিষ্ঠ ও আরামদায়ক। টিকিট পাওয়াও সোজা। কর্মশালা শেষে একদিন অতিরিক্ত থাকার আয়োজন করেছিলাম শুধু হোমিগটে কাটানোর জন্য।

হোমিগট একটি ছোট্ট গ্রাম। পোহাং শহর থেকে বাসে করে ১-১.৫ ঘণ্টা লাগে। যদিও সঠিক বাস খুঁজে নেওয়াটা একটু কঠিন হতে পারে। বিশেষ করে কোরীয় ভাষা না জানলে। আমার থাকার জায়গাটি ছিল হোমিগট থেকে ২০ মিনিট হাঁটা দূরত্বে গুমান-রি নামক আরেকটি গ্রামে। গুমান-রি থেকে সমুদ্রের ধার বরাবর হোমিগট পর্যন্ত হেঁটে যাওয়া যায়। বাঁপাশে আদিগন্ত বিস্তৃত পূর্ব সাগর। যার অন্য দিকে রয়েছে সূর্যোদয়ের দেশ জাপান, কোরিয়ায় যাকে ডাকা হয় ইলবন নামে। পূর্ব সাগরের স্বচ্ছ নীলাভ জলে দেখা যায় স্রোতের তালে দুলতে থাকা সবুজ শৈবাল। কোথাও বা তার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে ঈগল আকৃতির মস্ত পাথরের স্তম্ভ। ভোরের বেলা এখানে ওখানে দেখা যায় এক দুজন ঢেউয়ে ভেসে আসা সমুদ্র-শৈবাল কুড়িয়ে বেড়াচ্ছেন। দূরে চলে যায় বিশাল এক সমুদ্র তরী, মাঝে মাঝে শোনা যায় তার বাঁশি।

হোমিগট ঢোকার মুখে দূর থেকে দেখা যায় লাইট হাউস, কাছে গেলে দেখা যায় সমুদ্রের মাঝখান থেকে উপরে বাড়িয়ে দেওয়া হাত। এখানকার রেস্তরাঁ গুলোর বাইরে দেখা মিলবে বিশাল আকৃতির snow crab এর। ছোট্ট এই গ্রামটির একপাশে পূর্ব সাগর আর অন্য পাশে ছড়িয়ে আছে হলুদ শস্য ক্ষেত্র।